নারী সাহাবীদের ঈমানদীপ্ত জীবন’ মুসলিম বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টিকারী আরবী গ্রন্থ ‘সুওয়ারুম মিন হায়াতিস সাহাবিয়্যাত’ এর অনুদিত গ্রন্থ। অনুবাদক আরবী সাহিত্যমান ও রস অনুবাদে পরিপূর্ণভাবে তুলে আনতে চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখেননি।
‘নারী সাহাবীদের ঈমানদীপ্ত’ গ্রন্থে ইসলামের ইতিহাসের যেসব মহীয়সী নারীদের জীবনী আলোচিত হয়েছে:
(১)প্রিয় নবীর দুধমা হালীমা
(২) নবীজীর ফুফু ছফিয়্যাহ
(৩) প্রিয় নবীর কন্যা ফাতিমা তুয যাহরা
(৪)আবু বকর রাযি. এর কন্যা আসমা
(৫)নাসীবা আল মাযেনিয়্যা,
(৬) উম্মে হাবীবা(রমলা) বিনতে আবু সুফিয়ান
(৭) গুমাইছা বিনতে মিলহান
(৮) উম্মে সালামা
ইসলামের প্রথম শহীদ একজন মহিলা, একজন “নারী সাহাবী “। প্রথম ইসলাম গ্রহণকারীও একজন নারী। সমাজের অর্ধেক অংশ নারী, নারীর উন্নয়ন ব্যতিরেকে সমাজের উন্নয়ন সম্ভব নয়। ইসলামের ইতিহাসে নারীদের ভূমিকাও কম নয়। তাদের ঈমান, আমল,ধৈর্য, ইসলামের প্রতি ত্যাগের গল্পগুলো আমাদের মনে দাগ কাটে। ঈমানকে আরও প্রজ্জ্বলিত করে। ” নারী সাহাবীদের ঈমানদীপ্ত জীবন ” বইটি পড়ে এই বিষয় গুলোই দৃশ্য পটে ভেসে উঠে। বইটির লেখক কয়েকজন নারী সাহাবিয়ার জীবনী তুলে ধরেছেন, যারা তাদের জীবদ্দশায় প্রিয় নবী (সাঃ) এর সংস্পর্শ পেয়েছেন। যারা জীবন অতিবাহিত করেছেন ইসলামের সেই ইস্পাত কঠিন যুগে।
বইটিতে নবীর দুধমা হালীমা সা’দিয়া, ছফিয়্যাহ বিনতে আবদুল মুত্তালিব; নবীর স্নেহ ভালোবাসার ফুল (ফুফু), প্রিয় কন্যা ফাতিমাতুয যাহরা, আসমা বিনতে আবু বকর ( দুই ফিতাওয়ালী), নাসীবাহ আল মাযেনিয়্যা, রমলা বিনতে আবু সুফিয়ান, গুমাইছা বিনতে মিলহান ( উম্মে সুলাইম), উম্মে সালামা ( আরবের বিধবা) সম্পর্কে লেখা হয়েছে।
ছফিয়া(রাঃ) প্রথম মুসলিম নারী যিনি একজন মুশরিক হত্যা করেছেন, আসমা (রাঃ) মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও যুদ্ধের ময়দানে নিজের সন্তানকে ঠেলে দিয়েছিলেন, নাসীবাহ(রাঃ) যুদ্ধের ময়দানে দুর্বার সাহসের পরিচয় দিয়েছেন, গুমাইছা(রাঃ) যার বিয়ের মোহরানা ছিল ইসলাম, রমলা(রাঃ) ইসলামের জন্য বাবা ও প্রিয়তম স্বামী ত্যাগ করেছিলেন, কিভাবে?? এসব জানা যাবে বইটি পড়ার মাধ্যমে।
স্বল্প দৈর্ঘ্যের বইটি পড়ার সময় সাহাবিয়াদের জীবনী পড়ে কখনও চোখে পানি এসেছে, কখনও ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটেছে আবার কখনও মন বিস্ময়ে অভিভূত হয়েছে। আমার নড়বড়ে ঈমানে নাড়া দিয়েছে তাদের ঘটনা গুলো। বইটি পড়ে নিজেকে, নিজের জীবনকে ইসলামের সৌন্দর্য্যের সাজানোর অনুপ্রেরণা,
তারা যে কতটা মজবুত ঈমানের অধিকারী ছিলেন তা শহীদ সুমাইয়া (রাঃ) ঘটনা থেকে বুঝা যায়। নবীজীর প্রতি তাদের ভালোবাসার নিদর্শন, ইসলামের জন্য নিজের সন্তানকেও কুরবানী দিতে দ্বিধা না করা, কখনও যুদ্ধের ময়দানে নিজে যোদ্ধা হয়ে প্রতিশোধ গ্রহণ করা আবার কখনও সেবা, সুশ্রষা ও অনুপ্রেরণা দিয়ে যোদ্ধাদের সাহায্য করা, স্বামীর প্রতি তাদের একনিষ্ঠ শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও আনুগত্য দেখে সত্যিই বিমোহিত হতে হয়।
এককথায় অসাধারণ একটি বই।
Reviews
There are no reviews yet.